Cordyline Fruticosa অগ্নীশ্বর পাতাবাহার হলো একটি অসাধারণ সুন্দর এবং আকর্ষণীয় শোভাবর্ধক উদ্ভিদ যা আপনার বাড়ি ও বাগানে রাজকীয় সৌন্দর্য এনে দেয়। এই চমৎকার পাতাবাহার গাছটি তার উজ্জ্বল লাল, গোলাপী এবং সবুজ রঙের পাতার জন্য বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। অগ্নীশ্বর নামটি এর আগুনের মতো লাল পাতার রঙ থেকে এসেছে, যা যেকোনো বাগানকে প্রাণবন্ত করে তোলে।
উদ্ভিদের পরিচয় ও ইতিহাস
কর্ডিলাইন ফ্রুটিকোসা Cordyline Fruticosa হলো Asparagaceae পরিবারের একটি চিরসবুজ ফুলের উদ্ভিদ। এই প্রজাতিটি প্রথম বৈজ্ঞানিকভাবে শনাক্ত করেন বিখ্যাত উদ্ভিদবিজ্ঞানী কার্ল লিনিয়াস ১৭৫৪ সালে। তিনি প্রথমে এটিকে Convallaria Fruticosa নামে উল্লেখ করেছিলেন। পরবর্তীতে ১৯১৯ সালে ফরাসি উদ্ভিদবিজ্ঞানী অগাস্ট শেভালিয়ার (Auguste Chevalier) এটিকে Cordyline Fruticosa নামে পুনঃশ্রেণীবদ্ধ করেন, যা বর্তমানে এর স্বীকৃত বৈজ্ঞানিক নাম।
এই গাছটি মূলত দক্ষিণপূর্ব এশিয়া, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ, অস্ট্রেলিয়া এবং পলিনেশিয়ায় জন্মায়। হাজার বছর ধরে এশিয়া ও ওশেনিয়ার মানুষ এই গাছকে ঔষধি, খাদ্য এবং ধর্মীয় কাজে ব্যবহার করে আসছে।
গাছের বৈশিষ্ট্য
অগ্নীশ্বর পাতাবাহার একটি মাঝারি আকারের গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ যা ১.৫ থেকে ৪.৫ মিটার (৫-১৫ ফুট) পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হলো:
পাতা: ৩০-৬০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ৫-১০ সেন্টিমিটার চওড়া, চকচকে এবং চামড়ার মতো পুরু পাতা যা উজ্জ্বল লাল, গোলাপী, সবুজ বা বহুবর্ণের হয়ে থাকে। পাতাগুলি কাণ্ডের উপরের দিকে পাখার মতো সাজানো থাকে।
কাণ্ড: শক্ত কাঠের মতো সরু কাণ্ড যা সময়ের সাথে মজবুত হয়ে ওঠে।
ফুল: ৪০-৬০ সেন্টিমিটার লম্বা ফুলের থোকা যা হালকা হলুদ থেকে লাল রঙের সুগন্ধি ফুল দেয়।
ফল: ছোট লাল বেরি জাতীয় ফল যা পাখিদের আকৃষ্ট করে।
জনপ্রিয় স্থানসমূহ
কর্ডিলাইন ফ্রুটিকোসা বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে অত্যন্ত জনপ্রিয়:
হাওয়াই: এখানে এটি “টি প্ল্যান্ট” বা “কি” নামে পরিচিত এবং সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়া: থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইনে বাড়ির সামনে এবং বাগানে শোভা বর্ধনের জন্য ব্যাপকভাবে রোপণ করা হয়।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ: ফিজি, সামোয়া, তাহিতি এবং নিউজিল্যান্ডে ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক কাজে ব্যবহৃত হয়।
অস্ট্রেলিয়া: কুইন্সল্যান্ড অঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে জন্মায় এবং বাগান সাজানোর জন্য জনপ্রিয়।
ভারত ও বাংলাদেশ: শহর ও গ্রামাঞ্চলে বাড়ির টবে এবং বাগানে শোভাবর্ধক গাছ হিসেবে অত্যন্ত প্রিয়।
চাষাবাদ পদ্ধতি
মাটি: উর্বর, ভালো নিষ্কাশনযুক্ত দোঁআশ বা বেলে-দোঁআশ মাটি সবচেয়ে উপযুক্ত। জৈব সার মিশ্রিত মাটি গাছের বৃদ্ধির জন্য আদর্শ।
আলো: উজ্জ্বল পরোক্ষ আলো পছন্দ করে তবে আংশিক ছায়াতেও ভালো জন্মায়। সরাসরি প্রখর সূর্যালোক পাতা পুড়িয়ে দিতে পারে।
পানি: নিয়মিত পানি দিতে হবে তবে শিকড় যেন পানিতে ডুবে না থাকে। বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখুন।
তাপমাত্রা: ২০-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সবচেয়ে ভালো বৃদ্ধি পায়। ১৫ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা ক্ষতিকর হতে পারে।
সার: প্রতি ২-৩ মাস পর পর জৈব সার বা সুষম রাসায়নিক সার (NPK 10:10:10) প্রয়োগ করুন।
প্রজনন: কাণ্ডের কাটিং থেকে খুব সহজেই নতুন গাছ তৈরি হয়। ১৫-২০ সেন্টিমিটার লম্বা কাটিং মাটিতে রোপণ করলে ২-৩ সপ্তাহে শিকড় গজায়।
পরিচর্যা
- পাতায় ধুলো জমলে নরম কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন
- পুরাতন বা হলুদ পাতা কেটে ফেলুন
- বছরে একবার গাছের গোড়ার মাটি আলগা করে নতুন জৈব সার মিশিয়ে দিন
- টবে রোপণ করলে ২-৩ বছর পর পর বড় টবে স্থানান্তর করুন
- পোকামাকড় দেখা দিলে নিম তেলের স্প্রে ব্যবহার করুন
ব্যবহার ও উপকারিতা
শোভাবর্ধক: বাড়ির সামনে, বারান্দায়, অফিসে এবং বাগানে অসাধারণ সৌন্দর্য সৃষ্টি করে।
বায়ু পরিশোধক: ঘরের বাতাস থেকে ক্ষতিকর উপাদান দূর করে এবং অক্সিজেন সরবরাহ করে।
ঐতিহ্যবাহী ব্যবহার: অনেক সংস্কৃতিতে এটি সৌভাগ্য এবং সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
ঔষধি গুণ: ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসায় শিকড় কাশি, জ্বর এবং হজমের সমস্যায় ব্যবহার করা হয়।
বাংলাদেশে Ongkoor.com থেকে Cordyline Fruticosa অগ্নীশ্বর পাতাবাহার কিনুন
আপনি যদি বাংলাদেশে খুঁজছেন সেরা মানের Cordyline Fruticosa অগ্নীশ্বর পাতাবাহার, তাহলে Ongkoor.com হলো আপনার জন্য আদর্শ অনলাইন নার্সারি। Ongkoor.com বাংলাদেশের সবচেয়ে বিশ্বস্ত এবং জনপ্রিয় কৃষি পণ্যের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি পাবেন:
সতেজ ও স্বাস্থ্যকর গাছ – সরাসরি নার্সারি থেকে যত্নসহকারে নির্বাচিত, সাশ্রয়ী মূল্য – বাজার প্রতিযোগী দামে উন্নতমানের পণ্য, সারা বাংলাদেশে ডেলিভারি – ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট এবং সকল জেলায়, নিরাপদ প্যাকেজিং – গাছ যাতে সুরক্ষিত থাকে সেজন্য বিশেষ প্যাকেজিং, বিশেষজ্ঞ পরামর্শ – গাছের পরিচর্যা সম্পর্কে বিনামূল্যে পরামর্শ
Ongkoor.com শুধু পাতাবাহারই নয়, বিভিন্ন ধরনের বীজ, সার, কীটনাশক, ফলের চারা, ফুলের গাছ এবং অন্যান্য কৃষি পণ্য বিক্রয় করে থাকে। বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে আপনি Ongkoor.com ওয়েবসাইটে অর্ডার করে ঘরে বসে আপনার পছন্দের গাছ পেতে পারেন।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ)
প্রশ্ন ১: অগ্নীশ্বর পাতাবাহার কি রোদে রাখা যায়?
উত্তর: হ্যাঁ, তবে সরাসরি প্রখর রোদে না রেখে আংশিক ছায়া বা পরোক্ষ আলোতে রাখা ভালো। সকালের হালকা রোদ গাছের জন্য আদর্শ।
প্রশ্ন ২: কতদিন পর পর পানি দিতে হবে?
উত্তর: গ্রীষ্মকালে প্রতিদিন বা দুইদিন পর পর এবং শীতকালে সপ্তাহে ২-৩ বার পানি দিতে হবে। মাটি সামান্য শুকিয়ে গেলে পানি দিন।
প্রশ্ন ৩: টবের সাইজ কত বড় হওয়া উচিত?
উত্তর: ছোট গাছের জন্য ৮-১০ ইঞ্চি এবং বড় গাছের জন্য ১২-১৮ ইঞ্চি টব ভালো। টবে নিচে পানি বের হওয়ার ছিদ্র থাকতে হবে।
প্রশ্ন ৪: পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে কেন?
উত্তর: অতিরিক্ত পানি বা পানি জমে থাকলে, পুষ্টির অভাবে বা সূর্যের আলোর অভাবে পাতা হলুদ হতে পারে। সঠিক পরিচর্যা এবং সার প্রয়োগ করুন।
প্রশ্ন ৫: কাটিং থেকে কিভাবে নতুন গাছ তৈরি করব?
উত্তর: একটি স্বাস্থ্যকর কাণ্ড থেকে ১৫-২০ সেমি লম্বা কাটিং নিয়ে পানি বা স্যাঁতস্যাঁতে মাটিতে রোপণ করুন। ২-৩ সপ্তাহে শিকড় বের হবে।
প্রশ্ন ৬: এই গাছে কোন পোকামাকড়ের আক্রমণ হয়?
উত্তর: মাকড়সা জাতীয় পোকা, সাদা মাছি এবং মিলিবাগ আক্রমণ করতে পারে। নিম তেল বা সাবান পানির স্প্রে ব্যবহার করে দমন করা যায়।
প্রশ্ন ৭: ঘরের ভিতরে কি রাখা যাবে?
উত্তর: হ্যাঁ, ঘরের উজ্জ্বল স্থানে রাখা যায়। তবে মাঝে মাঝে বাইরে রোদে রাখুন এবং পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখুন।
প্রশ্ন ৮: গাছ কত দ্রুত বাড়ে?
উত্তর: সঠিক পরিচর্যায় বছরে ৩০-৫০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। তবে বৃদ্ধির হার মাটি, আলো এবং পুষ্টির উপর নির্ভর করে।
প্রশ্ন ৯: শীতকালে কি বিশেষ যত্ন নিতে হবে?
উত্তর: শীতে পানি কম দিন এবং ঠাণ্ডা বাতাস থেকে রক্ষা করুন। তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রির নিচে নামলে ঘরের ভিতরে রাখুন।
প্রশ্ন ১০: Ongkoor.com থেকে অর্ডার করলে কত দিনে পাব?
উত্তর: ঢাকার ভিতরে ২-৩ দিন এবং ঢাকার বাইরে ৩-৫ দিনের মধ্যে ডেলিভারি দেওয়া হয়। জরুরী ডেলিভারির ব্যবস্থাও রয়েছে।
আপনার বাড়ি ও বাগানকে সুন্দর করে তুলতে আজই Ongkoor.com থেকে অর্ডার করুন Cordyline fruticosa অগ্নীশ্বর পাতাবাহার এবং উপভোগ করুন প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য!





