Cinnamon Plant দারুচিনি গাছ:
Cinnamon plant/দারুচিনি গাছ, যার বৈজ্ঞানিক নাম Cinnamomum verum, হল একটি চিরসবুজ গাছ যা এর সুগন্ধি বাকলের জন্য পরিচিত। এটি প্রধানত শ্রীলঙ্কা এবং দক্ষিণ ভারতের অঞ্চল থেকে উদ্ভূত হলেও, বর্তমানে এটি বিভিন্ন গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং উপ-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে চাষ করা হয়। বাংলাদেশেও এই গাছটি এখন অনলাইন মাধ্যমে কিনতে পাওয়া যায়, বিশেষ করে Ongkoor.com-এ।
গাছের বৈশিষ্ট্য:
দারুচিনি গাছ সাধারণত ১০ থেকে ১৫ মিটার পর্যন্ত উচ্চতায় বেড়ে উঠতে পারে। গাছের বাকল পাতলা এবং মসৃণ, যার রঙ হলুদাভ বাদামী থেকে ধূসর। পাতা গাঢ় সবুজ, উজ্জ্বল এবং লম্বাটে আকারের। পাতার নীচের অংশ হালকা সবুজ এবং সামান্য মসৃণ।
চাষাবাদ ও যত্ন:
দারুচিনি গাছ চাষের জন্য গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং উপ-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু প্রয়োজন। এটি ভালোভাবে বৃদ্ধি পায় দোঁআশ মাটি এবং উপযুক্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা সহ সুনিষ্কাশিত মাটিতে। গাছটি সম্পূর্ণ সূর্যালোকে ভালোভাবে বৃদ্ধি পায়, তবে আংশিক ছায়াও সহ্য করতে পারে।
বীজ থেকে চারা তৈরি:
- ১. প্রথমে ভালো মানের দারুচিনি বীজ সংগ্রহ করতে হবে।
- ২. বীজগুলোকে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে একটি পাত্রে ভিজিয়ে রাখতে হবে ২৪ ঘণ্টা।
- ৩. একটি বীজতলা বা ট্রেতে বীজগুলো পুঁতে রাখতে হবে প্রায় ১ ইঞ্চি গভীরে।
- ৪. মাটি সবসময় আর্দ্র রাখতে হবে, তবে জলাবদ্ধতা এড়াতে হবে।
- ৫. ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে চারা গজাতে শুরু করবে এবং পর্যাপ্ত যত্নের মাধ্যমে চারা গাছগুলো বড় করা যেতে পারে।
রোপণ:
- ১. চারাগুলো প্রায় ২০-৩০ সেমি উচ্চতা হলে মাটিতে স্থানান্তর করতে হবে।
- ২. চারাগুলো প্রায় ৩-৪ মিটার দূরত্বে রোপণ করতে হবে যাতে গাছগুলো পর্যাপ্ত স্থান পায়।
- ৩. প্রথম কিছু বছর গাছগুলোকে পর্যাপ্ত পানি দিতে হবে, বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে।
দারুচিনি গাছের ফল: বৈশিষ্ট্য ও ব্যবহার
দারুচিনি (Cinnamomum verum বা Cinnamomum zeylanicum) গাছ মূলত একটি চিরহরিৎ বৃক্ষ, যা তার সুগন্ধী বাকল ও পাতার জন্য পরিচিত। তবে এই গাছের ফলও গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রকৃতিগতভাবে বেশ আকর্ষণীয়। দারুচিনি গাছের ফল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে নিচের বৈশিষ্ট্যগুলি লক্ষ করা যায়:






দারুচিনি গাছের ফলের বিবরণ
- আকৃতি ও আকার:
দারুচিনি গাছের ফল ছোট ও গোলাকার বা ডিম্বাকার হয়। এর ব্যাস সাধারণত ১ সেন্টিমিটার বা তার কম হয়। ফলটি প্রথমে সবুজ রঙের থাকে এবং পরিপক্ব হলে বেগুনি বা কালচে রঙ ধারণ করে। - বাহ্যিক গঠন:
ফলের বাইরের স্তর মসৃণ এবং সামান্য চকচকে। এটি দেখতে ছোট বেরির মতো। - অভ্যন্তরীণ গঠন:
ফলের ভিতরে এক বা দুটি বীজ থাকে। বীজগুলি দেখতে মসৃণ এবং বাদামি রঙের হয়। এগুলো থেকে তেল এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সংগ্রহ করা হয়।
ফল ধরার সময়
দারুচিনি গাছ ফুল ধরার পর ফল ধরে। ফুলগুলো ছোট, ফিকে হলুদ বা সাদা রঙের হয় এবং থোকায় থোকায় জন্মায়। সাধারণত গ্রীষ্মকালীন মৌসুমে ফুল ফোটে এবং এর কয়েক মাস পর ফল পরিপক্ব হয়।
দারুচিনি ফলের ব্যবহার
দারুচিনি গাছের ফল সরাসরি ব্যবহারের চেয়ে প্রক্রিয়াজাত করার জন্য বেশি পরিচিত। এর প্রধান ব্যবহারের দিকগুলি হলো:
- তেল উৎপাদন:
ফল থেকে সিজেনল (Cinnamyl acetate) এবং অন্যান্য অপরিহার্য তেল পাওয়া যায়, যা সুগন্ধি শিল্প এবং ঔষধি কাজে ব্যবহৃত হয়। - বীজ রোপণ:
দারুচিনি গাছের ফলের বীজ নতুন গাছ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি একটি প্রাকৃতিক এবং সহজ উপায়ে চাষের জন্য কার্যকর। - ঔষধি গুণাবলী:
ফল ও বীজ থেকে তৈরি তেল বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে এটি অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণাবলীর জন্য পরিচিত।
ব্যবহার ও উপকারিতা:
দারুচিনি গাছের বাকল এবং পাতা উভয়ই বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়। এর বাকল থেকে তৈরি মসলা বিভিন্ন রান্নায় ব্যবহৃত হয়। দারুচিনি মিষ্টি ও নোনতা উভয় ধরনের খাবারে একটি বিশেষ স্বাদ যোগ করে। এছাড়া এটি চা, কফি এবং বিভিন্ন বেকারি আইটেমে ব্যবহৃত হয়।
স্বাস্থ্য উপকারিতা:
- ১. প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত: দারুচিনি বহু প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে, এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
- ২. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ: দারুচিনিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা শরীরের কোষগুলোকে মুক্ত কণার ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
- 3. অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ: দারুচিনি প্রদাহনাশক গুণাবলীও রয়েছে যা বিভিন্ন প্রদাহজনিত সমস্যা মোকাবেলায় সাহায্য করে।
- 4. পাচনতন্ত্রের জন্য উপকারী: দারুচিনি হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং গ্যাস, বদহজম ইত্যাদি সমস্যা কমাতে সহায়ক।
- 5. বিষাক্ত পদার্থ নির্গমন: দারুচিনি লিভারকে সহায়তা করে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে।
দারুচিনি গাছের চারা কোথায় পাওয়া যায়:
বাংলাদেশে এখন Ongkoor.com-এর মাধ্যমে দারুচিনি গাছ সহজেই অনলাইনে কেনা যায়। এই ওয়েবসাইটটি বিভিন্ন প্রকারের দারুচিনি গাছ এবং বীজ সরবরাহ করে থাকে। গ্রাহকরা তাদের সুবিধা অনুযায়ী গাছ বা বীজ অর্ডার করতে পারেন এবং এটি তাদের ঠিকানায় সরাসরি পৌঁছে দেয়া হয়।
দারুচিনি গাছ শুধুমাত্র একটি মসলা গাছ নয়, এটি একটি স্বাস্থ্যকর ও প্রাকৃতিক উপাদান যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বহু উপায়ে ব্যবহার করা যায়। ঘরে দারুচিনি গাছ থাকা মানে শুধু মসলা উৎপাদন নয়, এটি আপনার বাড়ির পরিবেশকে আরো সতেজ ও সুগন্ধময় করে তুলতে পারে। Ongkoor.com-এর মাধ্যমে সহজেই এই গাছটি আপনার ঘরে এনে এর বিভিন্ন উপকারিতা উপভোগ করুন।